বুধবার সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রশ্নোত্তর পর্বে বিএনপির হারুনুর রশীদ সম্পূরক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীকে প্রটোকল ছাড়া বেরিয়ে ঢাকার মানুষ কেমন আছে তা দেখার অনুরোধ করেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “হ্যাঁ, প্রটোকল নিয়ে চলি। সেখানে নিরাপত্তার বিষয় আছে- এটাও যেমন ঠিক আবার শহর বা দেশের অবস্থা আমি একেবারেই জানি না, তা নয়। আমি সব দিকেই নজর রাখার চেষ্টা করি। ভালোভাবে লক্ষ রাখি।
“যেহেতু এদেশের দায়িত্ব আমি নিয়েছি। সব দিকে নজর দেওয়া আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য। কী হচ্ছে আমরা নজর রাখি। তবে এতে এটাও শুনতে হয় প্রধানমন্ত্রীকে কেন সব কাজ করতে হয়?”
ঢাকার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে মেয়েদের ওড়না পরা নিষিদ্ধ হওয়ার খবর গণমাধ্যমে আসায় এর বিরুদ্ধে সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবোধে আঘাত করে এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সরকার সব সময় সতর্ক রয়েছে।”
রাঙ্গাঁর অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “ওই অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তে কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। মেয়েদের ওড়না পরা নিষিদ্ধ করার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডিও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।”
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “বাংলাদেশ একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। বর্তমান সরকার ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও অন্যান্য সব ধর্মের চেতনা ও মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর।”
রাঙ্গাঁর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া আমরা শুরু করে দিয়েছি। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে এবং এটা চলতে থাকবে। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি সচেতনতার ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমামের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের জননিরাপত্তা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকার সর্বাত্মক উদ্যোগ ও সুদৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছে। দুর্নীতি, মাদক নির্মূল ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণের মাধ্যমে আমাদের অভিলক্ষ্য হল- নিরাপদ জীবন ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গঠন। সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূলে পুলিশ বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।”
সরকারি দলের মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “সরকারের নানামুখী কূটনৈতিক তৎপরতার ফলে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিদেশগামী কর্মীর সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি বছর গড়ে ৭-৮ লাখ কর্মী বিদেশ যাচ্ছে। ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৬৬ লাখ ৩৩ হাজার ২৫৪ জনের বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ সময়ে রেমিটেন্স এসেছে ১৫৩ দশমিক ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।”
সরকারি দলের আহসানুল ইসলামের (টিটু) সম্পুরক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা চাই ছাত্র-ছাত্রীরা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই হাতে-কলমে কাজ শিখবে। আর এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। এজন্য আমরা স্কুল থেকেই নির্দিষ্ট বিষয়গুলোতে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে আমরা শিক্ষাকে ঢেলে সাজাচ্ছি।
“কেউ ইচ্ছা করে বেকার থাকলে সেটা ভিন্ন কথা, কিন্তু এখন এত বেশি কর্মসূচি আমরা হাতে নিয়েছি তাতে যে কেউ চাইলে কিছু না কিছু করে খেতে পারে।”
সূত্র, বিডিনিউজ২৪.কম